তুমি একটা স্ক্রীন নেমের পিছনে লুকিয়ে থাকতে পার, কিন্তু তোমার আচরণের বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ
সমস্ত ধরণের লোকেদের সাথে ভাববিনিময় করা আর শেখার জন্য ইন্টারনেট একটা দারুণ জায়গা, তবে মনে রাখবেঃ কম্পিউটারের অন্য দিকে আরেকজন লোকই রয়েছে - একদম তোমার মত।
আচরণবিধি সমস্ত জায়গায় প্রযোজ্য, তার মধ্যে ইন্টারনেটও রয়েছে। একজন ভাল নেটিজেন (ইন্টারনেট+সিটিজেন) হয়ে ওঠার মাধ্যমে, সবার জন্য একটি নিরাপদ ও মজার অনলাইন পরিবেশ তৈরীর জন্য তোমার অংশটি কর, এবং এজন্য শুরু করা যাক নেটিকেট (ইন্টারনেট+এটিকেট) সংক্রান্ত সহায়ক তথ্যগুলি দিয়ে।
"তোমার নাম কি?"
সোশ্যাল মিডিয়া ও ফোরামগুলিতে তোমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু 'কিউলগার্ল2002' ('KewlGirl2002') নামে পরিচিত হতে পারে, কিন্তু বাস্তব জগতে তার নাম হয়তো শুধু অনি, লিসা বা মিরিয়াম। কিছু মেয়ের ক্ষেত্রে তারা যখন অনলাইনে থাকে তার নিজেদের একটা সম্পূর্ণ নতুন সৃষ্টিশীল দিক খুঁজে পায়, এবং খুব লাজুক একজন মানুষও হঠাৎ তোমার চেনা সবচেয়ে মিশুকে, গল্পবাজ ব্যক্তি হয়ে উঠতে পারে।
শুধু মনে রাখবেঃ তোমার ব্যক্তিগত তথ্যগুলি নিয়ে সতর্ক থাক! তুমি হয়তো কখনোই জানবে না যে, অন্য দিকের স্ক্রীন নেমের পিছনে সত্যিকারে কে রয়েছে, তাই অপরিচিত লোকেদের সাথে ছবি বা ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করবে না। বাস্তব জগতের মতই, 99% লোকই ভদ্র, স্বাভাবিক লোক হয়ে থাকেন, তবে তার মানে এই নয় যে, তুমি নিরাপদ থাকার চেষ্টা করবে না।
তাছাড়াও, লোকেদের সাথে ভাল ব্যবহার কর। তোমার অনলাইন ব্যক্তিত্ব হয়তো আসল তুমির চেয়ে অনেকটাই আলাদা হতে পারে, তবে তুমি কাউকে এরকম কথা বলবে না, যা তুমি সামনা-সামনি তাকে বলতে পারবে না।
"আমি শুধু প্রচন্ড রেগে গিয়েছিলাম!"
কখনো কখনো লোকেরা ইন্টারনেটে খারাপ ও অভদ্র ব্যবহার করে থাকেন। তাদেরকে তোমার মাথায় চড়তে দেবে না। অনলাইনে কড়া ও সহিংস কথা বলা আর বাস্তব জীবনে সেরকম কথা বলা একদম একই ব্যাপার। অনলাইনে বিস্ময়বোধক চিহ্ন দেওয়া ক্যাপিটাল লেটারে লেখা সমস্ত চিহ্নগুলি বোঝায় যে, তুমি সবসময় চিৎকার করছ এবং সত্যিকারে রেগে গিয়েছ। তুমি নিশ্চয়ই স্কুলে কারো উপর খুব চেঁচামেচি করতে চাইবে না, তাহলে অনলাইনেও তা করবে না।
কিন্তু তুমি যদি অনলাইনে একটা ঝগড়াতে জড়িয়ে পড়, সেক্ষেত্রে তোমার কি করা উচিত? একটু সময় নিয়ে গভীরভাবে শ্বাস নাও এবং মাথা ঠান্ডা কর। ভাব যে, তুমি যদি অনলাইনের বদলে বাস্তব জীবনে লোকটির সাথে সামনা-সামনি কথা বলতে তাহলে তোমার প্রতিক্রিয়া কি হত।
ডিজিটাল ঝগড়া কিভাবে সামলাতে হয় তার একটা দারুণ উদাহরণ দিয়েছেন সাংবাদিক নাজওয়া শিহাব। একজন সাংবাদিক হিসেবে, তিনি একজন প্রখ্যাত ব্যক্তি এবং অনেক লোকই তার সাথে অনেক ব্যাপারে একমত হন না - এবং সেই লোকেরা সবসময় যে সে ব্যাপারে ভদ্রভাবে কথা বলেন তা নয়। এমনকি লোকেরা যখন তার সম্পর্কে খুব খারাপ মন্তব্য টুইট করে, তিনি কখনোই বাজে নামে ডাকা, খারাপ আচরণ বা ব্যক্তিগত আক্রমণ করেননি। তিনি এমনকি এরকম অনেক লোককে উপেক্ষা করার সাহস দেখিয়েছেন, যারা তাকে অনলাইনে আক্রমণ করেছেন। তিনি মেয়েদের জন্য এর একটা দারুণ উদাহরণ দেখিয়েছেন যে, কখন তোমার মতামত প্রকাশ করতে হবে এবং কখন সেগুলিকে উপেক্ষা করতে হবে- কারণ যারা ঘৃণা করে তারা ঘৃণা করেই যায় এবং তুমি তাদের তুলনায় অনেক ভাল তাই না?
Share your feedback