আমার মায়ের প্রিয় ব‌ন্ধু হয়ে ওঠা

এটা সহজ ছিল না, কিন্তু এখন এটা নিশ্চিতভাবেই মূল্যবান।

আমার মা আর আমি পুরোপুরি আলাদা ধরনের মানুষ; মা শীতকাল পছন্দ করে আর আমি গ্রীষ্মকাল পছন্দ করি, মা কালো চা পছন্দ করে আর আমি আমার চায়ে দুধ ও চিনি যোগ করতে পছন্দ করি। সংক্ষেপে, আমরা কখনও কোনো ব্যাপারেই একমত হই না।

এটা আমাকে খুবই নিরাশ করে তুলত। আমি বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলাম যে আমি কখনই তার সঙ্গে কোনো কিছু সম্ব‌ন্ধে কথা বলতে পারব না।

আমার ব‌ন্ধুরা আমাকে বলত যে তারা তাদের মায়েদের সঙ্গে কীভাবে বিভিন্ন বিষয়ে কথাবার্তা বলতে পারে, যে বিষয়গুলো নিয়ে আমার মায়ের সঙ্গে কথা বলার সাহস ছিল না - যেমন সম্পর্ক ও স্কুল, আর আমার মনে হত যে উনি এটা বুঝবেন না।

যদিও আমার চাচীর সঙ্গে আমি ভালভাবে মিশতে পারতাম। তাই আমি এক দিন আমার মায়ের সঙ্গে সমস্যাপূর্ণ সম্পর্কের বিষয়ে চাচীর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। চাচী আমাকে অবাক করে দিয়ে বলেছিল যে আমার মাও ঠিক একই রকম অনুভব করেন, তিনি আমার আরো ঘনি‌ষ্ঠ হতে চাইতেন কিন্তু তিনি নিশ্চিত ছিলেন না যে তিনি কীভাবে আমার কাছে এসে ছেলে ব‌ন্ধু ও স্কুলের কাজের মত বিষয়গুলো সম্ব‌ন্ধে আমার সঙ্গে কথা বলবেন।

আমার চাচী আমাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন আমার এবং আমার মায়ের জন্য একটা বিশেষ দিনের পরিকল্পনা করতে, যেখানে আমরা সম্পর্কের ব‌ন্ধনে আব‌দ্ধ হতে পারব। তিনি আমাকে ব্যাখ্যা করেছিলেন যে আমি যদি আমার মায়ের সঙ্গে ঘনি‌ষ্ঠ হতে চাই, তাহলে আমার এগুলো করা উচিত:

  • তার সঙ্গে ব‌ন্ধুত্বপূর্ণ ও সম্মানজনক ভাবে কথা বলা। কথোপকথন থেকে আপনি কী পেতে চান সেই বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করা এবং তিনি কথা বলার সময় আপনি তার মতামত শোনার বিষয়টি নিশ্চিত করা।
  • যখন বাড়িতে শুধু আপনি এবং তিনি থাকবেন, তখন গল্পগুজব করার পরিকল্পনা করা। এইভাবে আপনি অন্যদের দ্বারা কোনো রকম মনোযোগ নষ্ট করা ছাড়াই তার পূর্ণ মনোযোগ পাবেন।
  • এমন কিছু করা যেটা আপনারা দু’জনই উপভোগ করবেন, যেমন আপনার প্রিয় টিভি অনুষ্ঠান দেখা কিংবা বাগানে কাজ করা। এটা যে কোনো বাধাকে ভেঙে দিতে সাহায্য করবে এবং কথোপকথনের ধারাকে সহজতর করে তুলবে।

আমি শান্ত হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছিলাম আর আমার চাচীর পরামর্শকে বাস্তবায়িত করতে শুরু করেছিলাম। আমি শুধু আমার ও আমার মায়ের জন্য বাড়িতে একটা দিনের পরিকল্পনা করেছিলাম। আমরা পরের শনিবার সম্পর্কের ব‌ন্ধনে আব‌দ্ধ হয়ে কাটিয়েছিলাম, আর এখন আমি আমার মায়ের সঙ্গে যে কোনো ব্যাপারে কথা বলতে বেশি স্ব‌চ্ছন্দ বোধ করি।

আমি খুবই খুশি যে আমার চাচীর কাছে পরামর্শ চেয়েছিলাম, কারণ আমার মা এখন আমার কাছে বিশ্বের সবচেয়ে প্রিয় মানুষ।

Share your feedback