এই 3টি যাদু শব্দকে কাজে লাগান
প্রিয়ার বয়স যখন 14, তখন তার সংগীতের প্রতি আগ্রহ বাড়তে লাগল। একদিন সে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিল, এমন সময় দূরে কোনও এক বাড়ি থেকে ভেসে আসা একটা সুর তার কানে এল, সেটা ছিল তার শোনা সবচেয়ে সুন্দর সুর। সে ওই সুর কোথা থেকে আসছে তা খুঁজতে খুঁজতে ছোট্ট একটা গলি ধরে একটা বাড়ির সামনে এসে দাঁড়াল। সেখানে সে দেখল যে তারই বয়েসি কয়েকজন ছেলেমেয়ে গান গাইছে আর কিছু বাদ্যযন্ত্র বাজাচ্ছে। এসব দেখে সে একেবারে মুগ্ধ হয়ে গেল।
তাকে যাতে কেউ দেখতে না পায় তার জন্য সে নিজেকে এক কোণে লুকোনোর চেষ্টা করছিল। সে আচমকা লক্ষ্য করল, সেখানে যিনি সংগীত শেখাচ্ছিলেন তিনি তারই স্কুলের বিজ্ঞানের শিক্ষক। সে একথা ভেবে আশ্চর্য হয়ে গেল যে, বিজ্ঞানের শিক্ষক কেন এখানে সংগীত শেখাচ্ছেন? এমন সময় তার ফোন বেজে উঠল। তার মা ফোন করেছে। ফোন বেজে উঠতেই সে সবার চোখে পড়ে গেল, সে তখন এক ঝাঁপে সেখান থেকে পালিয়ে গেল।
পরদিন বিজ্ঞান পিরিয়ডে তার শিক্ষক রাজেন বাবু তাকে বললেন, “প্রিয়া, কাল কি তুমিই আমার মিউজিক ক্লাসে লুকিয়ে লুকিয়ে গান শুনছিলে?” প্রিয়া লজ্জা পেয়ে হ্যাঁ-সূচকভাবে মাথা নাড়াল।
“তুমি কি কোনও বাদ্যযন্ত্র বাজানো শিখতে চাও?” রাজেন বাবু জিজ্ঞাসা করলেন।
প্রিয়া জানত যে, সংগীতের প্রতি তার যে ভালবাসা সেটা তার কোনও খামখেয়ালিপনা নয়। সে নিজের এই প্রচণ্ড ভালো লাগাটাকে নিয়ে কিছু করতে চায়, তাই সে হ্যাঁ বলে জবাব দিল। কিন্তু এ কথা নিজের বাবা-মাকে বোঝাতে তাকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে।
“কিন্তু আমার বাবা-মা আমাকে এসব শিখতে দেবেন বলে আমার মনে হয় না।” প্রিয়া আমতা আমতা করে বলল।
বাবা-মা বা অভিভাবকের কাছ থেকে অনুমতি আদায়ের জন্য কী কী করতে হবে, সে ব্যাপারে প্রিয়াকে কিছু পরামর্শ দিলেন রাজেন বাবু।
1. একনিষ্ঠ হও
যখন তোমাদের বয়স কম থাকে তখন সহজেই মন এদিক-ওদিক চলে যায়। সবকিছুই খুব মজাদার ও আকর্ষণীয় মনে হয়, কিন্তু একই সঙ্গে তোমরা সবকিছু করতে পারবে না। যখন তোমাদের বাবা-মা তোমাদের গানবাজনা শেখার জন্য পয়সা খরচ করবেন, তখন তাঁরা তো এ ব্যাপারে অতি অবশ্যই নিশ্চিত হতে চাইবেন যে, তোমরা গানবাজনা শিখতে শিখতে মাঝপথে ছেড়ে দেবে না, এর পেছনেই লেগে থাকবে। তোমরা কবে কবে নিজের নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সাক্ষ্য রেখেছিলে, সেসব দিনের কথা তাঁদের মনে করিয়ে দাও।
2.প্যাশন, প্যাশন আর শুধুই প্যাশন
একটা বাদ্যযন্ত্র শেখার প্রতি তোমার যে প্রচণ্ড ভালবাসা বা প্যাশন রয়েছে সেটা দেখাও নিজের বাবা-মাকে। সংগীতের প্রতি তোমার ভালবাসা নিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলো। তাঁদের বোঝাও যে সংগীত নিয়ে তুমি কী ভাবো আর একজন ভালো সংগীতশিল্পী হওয়ার জন্য যা যা প্রয়োজন সেসব তোমার মধ্যে রয়েছে।
3.নিজের স্বপ্নের কথা বলো
নতুন একটা বাদ্যযন্ত্র শিখে তোমার কী লাভ হবে বলে আশা করো তুমি? তাঁদেরকে বলো সে-কথা! তুমি কী কী দক্ষতা অর্জন করবে আর সংগীতের মাধ্যমে তোমার সামনে কী কী নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে, সেসব ব্যাপারে তাঁদের বলো। বিশেষ করে চূড়ান্ত সুযোগ-সুবিধাগুলোর কথা বলো। সেই সঙ্গে এও বলো যে, ভবিষ্যতে সংগীত কিভাবে তোমার জীবনে ইতিবাচক একটা প্রভাব ফেলবে।
তোমরা হয়তো বাদ্যযন্ত্র নাও শিখতে পারো, কিন্তু এই মূলমন্ত্রগুলোকে তোমাদের পছন্দের যে কোনও বিষয়ে বা ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে পারব, যেসব নিয়ে তোমরা ভবিষ্যতে কিছু করে দেখাতে চাও।
Share your feedback