আবার পিরিয়ড শুরু হওয়ার সময় হয়ে গেল কি
হ্যাঁ, আবার পিরিয়ড হওয়ার সময় হয়ে এল, কিন্তু প্রত্যেক মাসের পিরিয়ড একই রকমের হয় না। আর প্রত্যেকবার পিরিয়ডের সময় তোমার মন-মেজাজও একই রকম থাকে না। কোনও কোনও মাসে কোনও সমস্যাই হয় না। কোনও কোনও মাসে আবার খুব কষ্ট হয়।
কিন্তু চিন্তা করার কিছু নেই। পিরিয়ড হলে কী কী করতে হবে তার তিনটে পরামর্শ দেওয়া হল, যাতে তোমার কোনও কষ্টই না-হয়।
অকরণীয়ঃ “চর্বিযুক্ত, নোনতা আর মিষ্টি খাবার খাওয়া”
এসব খাবার ক্লান্তি বাড়ায়, পেট ফাঁপিয়ে দেয়, উদ্বেগ আর মনের দোলাচলও বাড়ায়। এসব তোমার স্তনকে খুবই নরম করে দিতে পারে। আরেকটা জিনিস এড়িয়ে চলতে হবে। দুগ্ধজাত খাবার। দুধে প্রচুর ক্যালসিয়াম থাকে আর পুষ্টিকরও। কিন্তু পিরিয়ডের সময় এটা তোমার কাজের নয়, কারণ দুধ খেলে গ্যাস হয় আর মাংসপেশিতে খিল ধরে। তাই পিরিয়ড চলা পর্যন্ত দুধ না-খাওয়াই ভাল। এটা ঠিক যে, এসব খাবার এড়িয়ে চলার কথা বলাটা যত সহজ করাটা তত সহজ নয়— বিশেষ করে এসব যদি তোমার পছন্দের খাবার হয়। কিন্তু এসবের থেকে দূরে থাকাটা তোমাদের জন্য কোনও কঠিন ব্যাপারই নয়।
করণীয়ঃ “মাছ, শাকসবজি আর ফলমূল খেতে হবে”
এসব খাবার তোমার মনকে চাঙ্গা রাখবে আর তোমার স্বাস্থ্য ঠিক রাখবে। আদা ও/বা মধু দিয়ে এক কাপ গরম চা খাও। পিরিয়ড চলার সময় পেশিতে যে-খিঁচ ধরে তা সারাতে এটা সাহায্য করে। তোমার রক্তস্রাব যদি বেশি হয় তাহলে আয়রন সমৃদ্ধ খাবারদাবার খাও, যেমন শাক আর সবুজ তরিতরকারি। এসব খেলে খুব এনার্জি পাবে তুমি। শরীরে জলের মাত্রা যাতে ভাল মতো থাকে তার জন্য প্রচুর জল খাবে।
অকরণীয়ঃ “ধোয়াধুয়ি করা বা নিজেকে পরিষ্কার রাখার কাজ নিজে না-করা”
কোনও কোনও অঞ্চলে মেয়েদের বলা হয় যে, পিরিয়ড চলাকালীন তারা যেন নিজেকে পরিষ্কার রাখার কোনও কাজ না-করে, কেননা এর ফলে পরিবেশ দূষিত হয় এবং এর ফলে এমনকী প্রজনন ক্ষমতাও হ্রাস পায়। কিন্তু এই কথাটা সত্যি নয়। পিরিয়ড নিয়ে যেসব উলটোপালটা ধারণা আছে, এটা সেসবের মধ্যে একটা।
করণীয়ঃ নিজেকে সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা”
তোমার যখন পিরিয়ড চলবে তখন জল দিয়ে নিজের যোনিকে ধুয়ে পরিষ্কার রাখাটা খুবই জরুরি। এরকম করলে তোমার গায়ে কোনও দুর্গন্ধ হবে না আর বাজে ব্যাকটেরিয়াও বাসা বাঁধতে পারবে না। দু’-চার ঘণ্টা অন্তর স্যানিটারি ন্যাপকিন বদলাতে হবে আর ব্যবহার হওয়া ন্যাপকিন পারলে ফেলে দিয়ো। একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়ার মতো ন্যাপকিন যদি ব্যবহার না-করে থাকো তাহলে সেটা নিয়ম করে ধোয়াধুয়ি করে শুকিয়ে নিয়ো।
অকরণীয়ঃ “সাদা জামাকাপড় পরা”
পিরিয়ডের সময় তোমার যদি জামাকাপড়ে রক্তের দাগ লেগে যাওয়ার প্রবণতা থাকে, তাহলে সাদা/উজ্জ্বল রঙের কাপড় পোরো না। এরকম করলে তোমাকে আর বারে বারে পেছন দিকে তাকিয়ে দেখতে হবে না যে রক্তের দাগ লাগল কি না। মাসিক চলাকালীন তোমার মনকে শান্ত রাখতে হবে।
করণীয়ঃ “গাঢ় রঙের জামাকাপড় পরা”
এতে তুমি অযথা উদ্বিগ্ন হবে না আর তোমার আত্মবিশ্বাসও বাড়বে। তোমার কাপড়ে দাগ লাগলেও কেউ বুঝতেও পারবে না। এতে তুমি প্রয়োজন পড়লে সবার অলক্ষে উঠে গিয়ে কাপড় পালটেও আসতে পারবে।
মনে রেখো, পিরিয়ড চলাকালীন সঙ্গমে লিপ্ত হওয়া মানে কিন্তু এই নয় যে তুমি গর্ভবতী হবে না আর তুমি যৌন সংক্রামিত ব্যাধি (STI)-তে আক্রান্ত হবে না।
কিছু জিজ্ঞাসা করতে চাও কি? বিশ্বস্ত কোনও প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সঙ্গে কথা বলো। য়েমন দিদি, কাকি-মাসি-জেঠি-পিসি-মামি প্রভৃতি বা কোনও অভিজ্ঞ স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গেও কথা বলতে পারো।
Share your feedback