হে ঈশ্বর, আমি কখনই জানতাম না যে আমি এটা করতে পারবো...

আমি আমার গ্রামের ব্যবসায়ীদের জন্য একটা ওয়েবসাইট তৈরি করেছিলাম

আমার নাম কেচি আর আমি দক্ষিণ নাইজেরিয়ার একটা ছোট জেলে গ্রাম থেকে এসেছি। বড় হওয়ার সময় আমি সবসময় ভেবেছিলাম যে আমার গ্রামে কিছুই করার নেই। আমি সবসময় অন্য কোনো জায়গায় পালিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। আমার জন্য আরো বেশি সুযোগসুবিধা আছে এমন কোথাও... এমন কোথাও যেখানে আমি আরো ভাল জীবন পেতে পারতাম আর একটা পা‌র্থক্য গড়ে তুলতে পারতাম।

মেয়েদের নতুন দক্ষতা অর্জন করতে সাহায্য করার ওপরে মনোনিবেশকারী একটি দাতব্য সং‌স্থা এক দিন আমার এলাকায় একটা প্রতিযোগিতা আয়োজন করেছিল। ওয়েবসাইট ও কোডিং সম্ব‌ন্ধে শেখার জন্য বিজয়ীকে একটা বৃত্তিমূলক কোর্সে ভর্তি করা হবে। কী চমৎকার!? আমি ভেবেছিলাম স্কুলে না যাওয়ার কারণে আমার অসুবিধা হবে, কিন্তু তা হয় নি। বৃত্তিমূলক কোর্সগুলো আপনাকে সব কিছুই গোড়া থেকে শেখায়। আমাকে এই প্রতিযোগিতায় জিততেই হত!

কমিউনিটিকে উন্নতি করতে সাহায্য করার জন্য একটা ধারণা দেওয়াই ছিল চ্যালেঞ্জ। সবচেয়ে সৃষ্টিশীল ধারণাটাই জয়ী হবে! আমি এক মুহূর্তের জন্য আটকে পড়েছিলাম মনে হয়েছিল, কারণ আমি সবসময় ভেবেছিলাম যে আমার গ্রামে কোনো আশা নেই, কিন্তু এই চ্যালেঞ্জ আমার চিন্তাভাবনাকে আর আমি বিষয়গুলোকে যে নজরে দেখতাম তাকে পালটে দিয়েছিল। আমি বাইরে বেরিয়ে মানুষদের সঙ্গে তাদের সমস্যাগুলোর বিষয়ে কথা বলা শুরু করেছিলাম। আমি যেহেতু অচেনা মানুষদের সঙ্গে কথা বলব, তাই বাড়তি নিরাপত্তার জন্য আমার মাকে আমার সঙ্গে থাকতে বলেছিলাম।

আমার সব সাক্ষাৎকারগুলোর পরে আমি একটা সাধারণ সমস্যা দেখতে পেয়েছিলাম। আমার গ্রামে এত বেশি প্রতিভা ছিল অথচ নাইজেরিয়ার বাকি অংশের মানুষদের এই ব্যাপারে কোনো ধারণাই ছিল না। আমরা খাবার থেকে শুরু করে পোশাক ও কাঠের ঝুড়ি পর্যন্ত অনেক কিছুই তৈরি করেছি, কিন্তু সেগুলো কেনার কেউ ছিল না। আহা! আমি যদি ব্যবসায়ীদের জন্য একটা ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারি, তাহলে এটা তাদেরকে তাদের মালপত্র বিক্রি করার জন্য একটা প্ল্যাটফর্ম দেবে আর এটা আমাদের গ্রামের জন্য অ‌র্থ রোজগার করবে। আমি আমার ধারণাটা দাতব্য সং‌স্থাটির সামনে উপ‌স্থাপন করেছিলাম, আর আমি জয়ী হয়েছিলাম! আমি নিজের ব্যাপারে খুবই খুশি ও গর্বিত হয়েছিলাম।

এটা মজার ছিল যে আমার অন্য কোথাও পালিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হয়নি। আমি যেখানে ছিলাম ঠিক সেখানেই আমার স্বপ্নগুলোকে বাস্তবায়িত করতে পেরেছিলাম। কখনও কখনও আপনার স্বপ্নগুলোকে বাস্তবায়িত করার জন্য আপনার বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার প্রয়োজন হয়, কিন্তু আপনি যদি তা না পারেন সেই ক্ষেত্রে আপনি যেখানে থাকেন ঠিক সেখানেই যে সব সুযোগসুবিধা আছে সেগুলোকে খাটো করে দেখবেন না!

তাছাড়া আপনার স্বপ্নের শক্তিকেও কখনও খাটো করে দেখবেন না। আমি ভেবেছিলাম আমি শুধু ব্যবসায়ীদের জন্য একটা ওয়েবসাইট তৈরি করছিলাম, কিন্তু এটা তার চেয়েও বড় হয়ে উঠেছিল। বৃত্তিমূলক কোর্সের পরে আমি অন্য মেয়েদেরকেও ওয়েবসাইট ও কোডিং সম্ব‌ন্ধে শেখানো শুরু করেছিলাম। ব্যবসায়ীদের থেকে পাওয়া অতিরিক্ত অ‌র্থ গ্রামের জন্য একটা নতুন হাসপাতাল নির্মাণ করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। এই সব চমৎকার ব্যাপারগুলো করেছে শুধু একজন মেয়ে, যার একটা স্বপ্ন ছিল।

তাই স্প্রিংস্টাররা, নিজের ওপরে বিশ্বাস রাখুন, নিজের স্বপ্নগুলোকে বিশ্বাস করুন, আর তাহলে যে কোনো কিছুই সম্ভব!

Share your feedback