... তাও নিজের স্বপ্নপূরণ করা যায়।
মেয়েরা, সবাই শোনো
আমার নাম রুথ আর আমার কম বয়সেই বিয়ে হয়ে গিয়েছিল! আমি মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করার পর বাবা-মা আমার জন্য একটি পাত্র খুঁজে নিয়ে তার সঙ্গে আমার বিয়ে দিয়ে দিয়েছিলেন। প্রথমে তো বেশ ভালই লেগেছিল, কিন্তু তারপর জীবনটা হয়ে গিয়েছিল থোড়-বড়ি-খাড়া: ঘুম থেকে ওঠা, স্বামী কাজে বেরোবে, তাই তার জন্য খাবার তৈরি ইত্যাদি করা, ঘরের কাজকর্ম করা, খাওয়াদাওয়া আর তারপর ঘুমিয়ে পড়া।
আমি প্রায়ই ভাবতাম, “এই ভাবেই কি আমার বাকি জীবনটা কেটে যাবে না কি আমি এখনও স্কুল শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্নটা পূরণ করতে পারি?”
রাতে খাওয়াদাওয়ার পর আমি আমার স্বামীকে নিয়ে এক জায়গায় গেলাম, আমাদের দু’জনেরই ওই জায়গাটা পছন্দ। সেখানে আমি তাঁকে বললাম যে আমি শিক্ষিকা হতে চাই। তিনি রাজি হলেন না। বললেন যে, এসব করতে গেলে আমাকে অনেক কাজের চাপ নিতে হবে। আমরা কেউ কাউকে নিজের কথা বোঝাতে পারলাম না তাই কোনও ঐকমত্যেও পৌঁছনো গেল না। আমি ঠিক করলাম যে, আর কোনও দিনও এসব কথা তুলব না আর এ নিয়ে কোনও তর্কও করব না।
সেই সপ্তাহটার শেষের দিকে আমি ঠিক করলাম যে এ ব্যাপারে আমি মায়ের পরামর্শ নেব। আমাকে যখনই কোনও জটিল সিদ্ধান্ত নিতে হয়, তখন মা-ই সবসময় আমার পাশে থাকেন।
মা আমাকে বললেন যে, বিয়ে ব্যাপারটা খুবই জটিল। কখনও কখনও স্বামী-স্ত্রীর মতের অমিল হয়েই থাকে। এ রকম বিশেষ করে তখন হয়, যখন স্ত্রী তার কোনও স্বপ্নপূরণ করতে চায়। মা আমাকে বললেন যে, এই বিষয়টা আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে আমার উচিত আরও একবার আমার স্বামীর সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলা। তিনি বললেন যে, স্বামীকে বোঝাতে হবে, আমার স্বপ্নপূরণ হলে কী লাভ হতে পারে। যেমন, সংসার খরচের ভার আমিও নিতে পারব, স্বামীকে কাজে কী ধরনের চাপের মধ্যে থাকতে হয় সেটা বুঝতে পারব আর তাঁকে আমি প্রয়োজনে পরামর্শও দিতে পারব। তার ওপর আমরা দু’জনেই যদি রোজগার করতে পারি, তাহলে কিছু টাকা আমরা ভবিষ্যতের জন্যও জমিয়ে রাখতে পারব।
জটিল বিষয় নিয়ে কথাবার্তা বলতে গেলে তিনটে কথা মাথায় রাখতে হবে বলে জানালেন আমার মা। যেমন:
কথা বলার জায়গাটা শান্ত ও নিরিবিলি হওয়া চাই।
এমন একটা কথা বলে শুরু করতে হবে, যে-ব্যাপারে সবার আগ্রহ থাকে, যাতে পারস্পরিক যোগাযোগটা ভাল হয় আর সুষ্ঠু ভাবে কথাবার্তা চালিয়ে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।
নিজের কথাগুলো ভাল করে বুঝিয়ে বলতে হবে। পরিস্থিতি জটিল হয়ে গেলেও মনে রাখতে হবে যে কখনই যেন গলা চড়িয়ে কথা না-বলি।
আমি মায়ের পরামর্শ মতোই কাজ করলাম। স্বামীর সঙ্গে এবার কথা বলে মনে হল, আমার শিক্ষিকা হতে চাওয়া বিষয়টি তাঁর ভাল লেগেছে। তিনি আমাকে বললেন, পরে ভেবে জানাবেন। কিছুদিন পর দেখলাম তিনি নিজের মত বদলে ফেলেছেন। তিনি আমাকে আমার স্বপ্নপূরণের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভাবে সাহায্য করেছেন!
এখন আমি বুঝি যে, তোমার কম বয়সে বিয়ে হয়ে গেলেও তুমি তোমার স্বপ্নপূরণ করতে পারবে। শুধু তোমার পাশে এমন একজনকে থাকতে হবে, যে তোমাকে সঠিক পরামর্শ দেবে আর তোমার পাশে থাকবে।
Share your feedback