না-পাঠালেই ভাল হত
পিটার আর আমি খুব ভাল বন্ধু। প্রত্যেক দিন রাতে ওর সঙ্গে কথা বলি, কখনও কখনও ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলতে থাকে কথা। কয়েক সপ্তাহ আগে ও আমাকে আমার নগ্ন ছবি পাঠাতে বলল। কথাটা শুনেই আমি প্রথমে হেসেছিলাম, তারপর বললাম, “একদম পাঠাব না!” তারপর ও অজস্র মেসেজ পাঠাতে লাগল শুধু একটা সেরকম ছবি পাঠানোর জন্য। আমি পাত্তা দিইনি। ভেবেছিলাম ও নিজেই একসময় বিরক্ত হয়ে মেসেজ পাঠানো বন্ধ করে দেবে।
তারপর একদিন স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ও আমাকে বলল, চলো দৌড় লাগাই। বলল, দৌড়ে তার কাছে হেরে গেলে আমাকে আমার নগ্ন ছবি পাঠাতে হবে ওকে। আমি কোনও দিন দৌড়ে হারিনি, তাই ওর কথায় রাজি হয়ে গেলাম। কিন্তু কেমন করে জানি না সেদিন হেরে গেলাম।
আমি ওর মুখ বন্ধ করার জন্য শুধু ব্রা পরে তোলা একটা ছবি পাঠালাম। তারপর বারে বারে বলতে লাগল, ব্রা না-পরা একটা ছবি পাঠাতে হবে। বলল, তাকে কথা দিয়েছিলাম আমি সেরকম ছবি পাঠাব বলে। তারপর আমি নিরুপায় হয়ে ঊর্ধ্বাঙ্গ অনাবৃত একটা ছবি পাঠালাম।
সঙ্গে সঙ্গে ভাবলাম, ভুল করে ফেলেছি। আমি ওকে বললাম, ছবিটা ডিলিট করে ফেলতে, কিন্তু ও বলে দিল, করবে না। আমি বুঝতে পারছিলাম না কী করব, ভাবলাম ও তো আমার বন্ধু।
আমার মা লক্ষ করল আমি চুপচাপ আর মনমরা হয়ে থাকি। তাঁকে এসব কথা বলতে আমার ভয় করছিল কিন্তু আমি এ-ও চাই না যে তিনি আমাকে নিয়ে ভেবে ভেবে পাগল হয়ে যান।
তাঁর সঙ্গে চ্যাট করে করে জানতে পারলাম যে, তিনি চাইছেন যে আমি তাঁর কাছে গিয়ে সব খুলে বলি যে আমি কোনও সমস্যায় পড়েছি কি না বা আমাকে কেউ কোনও ভাবে আঘাত দিয়েছে কি না। আমি ভাবলাম যে, তাঁর ওপরই ভরসা করতে পারি আর আমার কথা শুনে তিনি একটু ভেঙে পড়লেও তিনিই আমাকে সাহায্য করতে পারবেন।
আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, আমি কি তাঁর সঙ্গে একটা গোপন কথা নিয়ে আলোচনা করতে পারি। সেই সঙ্গে এ-ও জিজ্ঞাসা করে নিলাম যে আমার কথা শুনে আমার উপর রাগ করবেন না তো, কেননা আমি যে-কথাটা বলতে যাব, তাতে ভুলটা আমারই হয়েছে। তিনি আমার এই কথায় রাজি হলেন। আমি তাঁকে সব কথা খুলে বলার পর তিনি প্রথমেই আঁতকে উঠলেন আর খুব হতাশ হলেন, কিন্তু তিনি কথা দিয়েছিলেন যে রাগ করবেন না তাই চুপচাপ থাকলেন। এরপর বিষয়টা নিয়ে আমাদের মধ্যে ইতিবাচক কথোপকথন হল।
তিনি আমাকে বললেন যে, মেয়েরা বয়ঃসন্ধির মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় ছেলেরা তাদের প্রতি আকর্ষিত হয়, যা অযাচিত। কোনও কোনও ছেলেকে আমরা নিজের বন্ধু বলে ভাবলেও তারাই হয়তো আমাদের এমন সব যৌন কাজকর্ম করার জন্য জোর করবে, যেসব করতে আমাদের মোটেও ভাল লাগে না। মা আমাকে বললেন যে, যদি কখনও মনে হয় কেউ কোনোভাবে চাপ দিচ্ছে তাহলে সবচেয়ে ভাল হয় এমন কারও সঙ্গে কথা বলা যাকে তুমি বিশ্বাস করতে পারো, যে তোমার পাশে থাকবে আর তোমাকে পরামর্শও দেবে। আমরা এই পরিস্থিতির থেকে বেরিয়ে আসা নিয়ে অনেক আলোচনা করলাম। মা আমাকে খুব সাহায্য করেছিলেন।
আমরা ঠিক করলাম যে, আমরা পিটারের সঙ্গে কথা বলব। মা আমাকে শিখিয়ে দিয়েছিলেন যে, পিটারের সঙ্গে এমন ভাবে কথা বলতে যাতে তাকে আমার নিজের মনের বিভ্রান্তিগুলো ভাল করে বোঝাতে পারি আর এও বোঝাতে পারি যে তার আচরণে আমি খুবই আহত হয়েছি আর সব শোনার পর সে যাতে সানন্দে আমার ছবিগুলো ডিলিট করে দেয়। মায়ের সঙ্গে যদি আগেই কথা বলে নিতাম, তাহলে এই সমস্যায় পড়তে হত না— কারণ এমন কোনও সমস্যা নেই, যার সমাধান মা করতে পারেন না!
কেউ কোনও ব্যাপারে চাপ দিলে এমন কাউকে খুঁজে নাও যার কাছে তুমি নিজের সব কথা বলতে পারো— তিনি তোমার মা, দিদি, বন্ধু বা প্রতিবেশী যে-ই হোন না-কেন।
Share your feedback