জীবন সবসময় আমাদের পরিকল্পনা অনুসরণ করে না, তবে ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়।
আমাদের স্প্রিংস্টার্সরা জানে যে আমাদের ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু যখন আমাদের সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায় তখন কী হবে?
এই মুহুর্তে, জীবনটি কিছুটা ভীতিজনক ও অনিশ্চিত বোধ হতে পারে। জীবনে কখনও কখনও, আমরা যতটা পরিকল্পনা করি এবং প্রস্তুত থাকিনা না কেন, বিষয়গুলি যে কেবল আমাদের মনের মতো হবে তা না।
যদিও জীবনে উদ্বেগ, অপ্রত্যাশিত চ্যালেঞ্জগুলি সম্পর্কে উদ্বিগ্ন, দু: খিত বা রাগান্বিত হওয়া একেবারে স্বাভাবিক, তবুও এই একই চ্যালেঞ্জগুলি আমাদেরকে আরও শক্তিশালী করে এবং বিশ্বকে দেখানোর সুযোগ যে আমাদের মেয়েরা কতটা সুদৃঢ়।
এখানে মুজি বলে একটি মেয়ে্র একটি গল্প দেওয়া হল। মুজি যখন তার হাইস্কুলের শেষ বর্ষে ছিল তখন মনে হয়েছিলো তার সবচেয়ে বড় স্বপ্নটি সত্যি হতে চলেছে: সে কলেজে ভর্তি হয়ে গেছে!
একটি ছোট মেয়ে হিসাবে তার ছোট গ্রামে বড় হওয়ার সাথে সাথে মুজি স্বপ্ন দেখেছিল যে একদিন শহরে গিয়ে কলেজে যাবে। সে খুব উচ্ছ্বসিত ছিল, কিন্তু তার বাবা-মা’র সাথে কথা বলার পরে সে বুঝতে পেরেছিলো যে তার পড়াশুনার জন্য অর্থ যোগানোর মতো কোনো অর্থ তাদের নেই।
যোগানোর ক্ষমতা তাদের ছিল না বুঝতে পেরে মুজি ভেঙ্গে পড়েছিলো। মর্মাহত, রাগান্বিত ও হতাশ বোধ করে কিছুটা সময় সে কাটিয়েছিলো। কিছু সময় পরে, সে শক্তি পরিকল্পনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছল: যদি তার বাবা-মা কলেজের জন্য অর্থ দিতে না পারেন, তবে সে নিজেই এর জন্য অর্থ যোগানোর উপায় খুঁজে বের করবে।
মুজি জানায় যে তার ভর্তি স্থগিত করতে হবে এবং হাইস্কুলে থেকে পাশ করার সাথে সাথেই সে একটি চাকরী খুঁজতে গিয়েছিল।
অবশেষে সে কাছের একটি শহরের একটি ছোট স্থানীয় রেডিও স্টেশনে একটি কাজ পেয়েছিল এবং সে বছরটি জুনিয়র সাংবাদিক হিসাবে কাজ করে এবং তার সমস্ত অর্থ সাশ্রয় করে।
এক বছর কঠোর পরিশ্রম ও প্রচুর সঞ্চয় করার পরে, মুজি কলেজে ভর্তির হওয়ার কথা জানায় এবং সে লেখাপড়ার খরচ মেটানোর জন্য বৃত্তির জন্য আবেদন করার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর কি হল বলতো?! তার কঠোর পরিশ্রম কাজে লেগেছে! সে কলেজে যাচ্ছে এবং সে একটি পূর্ণ বৃত্তি পেয়েছে!
মুজি বিশ্বাসই করতে পারেনি যে এটি সত্যিই হয়েছে, তবে সে জানত যে তার সামনে আরো কাজ আছে: তার বৃত্তি কেবল তার শিক্ষার জন্যই দেওয়া হয়েছিল এবং একটি শহরে জীবন ব্যয়বহুল হতে পারে। সে কীভাবে বেঁচে থাকবে?
মুজি যে রেডিও স্টেশনে কাজ করত সেখান থেকে একটি রেফারেন্স চিঠি পায়, সেটা তার কলেজের রেডিও স্টেশনে একটি পার্ট-টাইম চাকরীর জন্য আবেদন করে । তার চাকরি হয়েছিলো! কম বেতনের-চাকরি করে সে যে অর্থ উপার্জন করেছিলো, সেই বেতনটিই তার জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে যথেষ্ট ছিলো।
মুজি তার পরিবারে প্রথম ব্যক্তি যেটি কলেজে যায় এবং সে নিজেই এটি করে! স্নাতক শেষ হওয়ার পরে মুজি তার কাজের অভিজ্ঞতাটি রাজধানী শহরে পেশাদার লেখকের চাকরি পেতে ব্যবহার করেছিলো। এটা সত্যিই সব সব কাজে এসেছে!
যদিও সে খুব মন খারাপ ও হতাশ হয়েছিল, তবুও সেই একই চ্যালেঞ্জ এবং বাধা ছিল যা মুজিকে তার স্বপ্নগুলি বাস্তবায়িত করতে আসলেই সহায়তা করেছিল।
যদি সে বছরে বাদেকলেজে ভর্তি না হয়েও কাজ না করতে হতো তবে সে বৃত্তি অর্জন করতে পারতো না। এবং যদি তার গ্রামে কাজের অভিজ্ঞতা না থাকতো তবে তার কলেজ ক্যাম্পাসে তিনি চাকরিটি অর্জন করতে নাও পারতো। এবং যদি সে কলেজের সময় জুড়ে কাজ না করতো তবে সে সম্ভবত স্নাতক শেষ করার পরে কোনো পেশাদার চাকরী অর্জন করতে পারতো না! মুজির কঠোর পরিশ্রম এবং দৃঢ় সংকল্পের জন্য এটি সবই কার্যকর হয়েছিলো।
তোমার জীবনে এমন অনেক কিছুই থাকতে পারে যা তুমি এই মুহুর্তে যেভাবে পরিকল্পনা করেছিলে সেভাবে হচ্ছে না, তরুণী মুজির মতো, তবে তোমার নিরাশ, রাগান্বিত ও হতাশ বোধ হওয়া ঠিক আছে। কিন্তু, মেয়ে, তুমি শক্তিশালী এবং আপনার স্বপ্ন কোথাও যাচ্ছে না! তুমি এটি পারবে এবং আমরা তোমাকে বিশ্বাস করি!
Share your feedback