মেয়েরা আর ছেলেরা...

কাদের অধিকার বেশি?

স্কুলের প্রথম দিনেই ট্যামির নিতম্বে একটা চড় মেরেছিল তার উঁচু ক্লাসে পড়া একটা ছেলে। সেই প্রথম এরকম হয়নি। কিন্তু স্কুলের যেসব ছেলেরা তাকে আর অন্য মেয়েদের সম্মান করে না, তাদের সেদিন এটা বলার সময় হয়েছিল, “আর না!” তাই সেদিন ট্যামি তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল যারা তাকে হয়রানি করছিল। আর সেদিন তারই জিত হয়েছিল!

সে সেদিন যা করেছিল, তা এই রকম:

“নিজের অধিকার সম্পর্কে জানো”: ট্যামি জানত ছেলেদের এই আচরণ ঠিক নয়। সে জানত যে, মেয়েদের গায়ে যে কেউ হাত দিতে পারে না, তাদের শরীরকে কেউ নিজের বলে ভাবতে পারে না আর তাদের পরিসরকে সবার সম্মান জানানো উচিত। শিক্ষার অধিকার ছেলেদের যতটা ঠিক ততটা অধিকার মেয়েদেরও আছে। অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকারাই বলে এসেছেন, “ছেলেদের বদলানো যাবে না।” কিন্তু ট্যামি এই কথাটা আর মানতে পারে না।

“সচেতনতা বাড়াও”: ট্যামির ক্লাসে আর স্কুলে যেসব মেয়েদের অভব্য আচরণ সহ্য করতে হয়েছে, তাদের সবার কথা সে শুনল। সে দেখে অবাক হয়ে গেল যে, কত মেয়েকেই না এমন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে আর তারা সবাই খুব ক্ষুব্ধ যে, ছেলেদের কোনও শাস্তিই দেওয়া হয় না। সে এই কথাগুলো তার বাবা-মাকে বলল, তার বাবা-মা এই কথাগুলো আবার অন্যান্যদের বাবা-মাকে বলল, শেষ পর্যন্ত বিষয়টা স্কুল কর্তৃপক্ষের কানে গিয়ে পৌঁছল।

“যে যা খুশি বলুক, কান দিতে হবে না”: লোকে চুপচাপ থাকতে বলবে। কিন্তু কোনও বিষয় যদি তোমাকে স্বচ্ছন্দে থাকতে না-দেয় বা তোমার অধিকারকে খর্ব করে, তাহলে তুমি সবচেয়ে ভাল যে কাজটা করতে পারো, তা হল মুখ খোলা। ট্যামির মতো তোমরাও তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারো, যাদের তোমরা বিশ্বাস করো। যেমন তোমার দিদি, বাবা-মা, শিক্ষক-শিক্ষিকা বা তোমার বন্ধুবান্ধব— যারা তোমার সমর্থনে এগিয়ে আসবে। সেইসব লোকের কথা শোনো যারা তোমাকে ভালবাসে আর অভব্য আচরণকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়।

“নিজের ক্ষমতাকে জানো”: একটা কথা জেনো, কোনও কিছুর বদল আনার মতো ক্ষমতা তোমার আছে। কেউ যাতে তোমার মধ্যে এই বিশ্বাস জন্মিয়ে দিতে না-পারে যে, ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা অনেকাংশেই কম। প্রতিদিনই, সারা বিশ্বে মেয়েরা আর মহিলারা তাদের সমাজের চিন্তাধারায় বদল নিয়ে আসছে। একটু সাহস দেখালেই অনেক বড় রকমের প্রভাব পড়তে পারে। যেমন কেউ অভব্য আচরণ করলে, তাকে মুখের ওপর জিজ্ঞাসা করা, তোমার মাথা ঠিক আছে তো।

সবার হয়ে কথা বলে আর অন্যান্য মেয়েদের কথা সবাইকে জানিয়ে ট্যামি স্কুল কর্তৃপক্ষের ওপর এমন চাপ সৃষ্টি করেছিল যে তাঁরা শেষমেশ এটা মানতে রাজি হয়েছিলেন যে, স্কুলে মেয়েদেরকে যেসব ছেলেরা হয়রানি করবে, তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।

এরপর যদি কেউ তোমাকে এটা বলতে চেষ্টা করে যে, “ছেলেদের বদলানো যাবে না”, তখন তার বিরুদ্ধে কথা বলা ও রুখে দাঁড়ানোর অধিকার তোমার আছে বলে জেনে রেখো। সবসময় তোমাকে ট্যামির মতো এগিয়ে না-গেলেও চলবে, তার চেয়ে তুমি এমন কোনও মেয়েকে খুঁজে বের করতেই পারো, যে তোমাদের মতো মেয়েদের হয়ে কথা বলতে পারবে। একসঙ্গে অনেকে মিলে এককাট্টা হলে অনেক বল পাওয়া যায়, তখন তুমি নিজের কথা কণ্ঠ ছেড়ে বলতে পারবে।

Share your feedback