তিনটি কারণে আপনি ছেলে হোক চাইবেন না

আপনি যা যা চান তা সবই পেয়েছেন!

মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এবার আমার উঁচু ক্লাসের পড়াশোনা শুরু হবে। আমি একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই- সে জন্য আমাকে অনেক নম্বর পেতে হবে। আমি নিজের লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য বদ্ধপরিকর।

কিন্তু কয়েক দিন আগে আমার বাবা-মা বলল যে আমাকে স্কুলের পড়াশোনা ছাড়তে হবে আর আমাদের পারিবারিক এক বন্ধুর সঙ্গে বিয়ে করতে হবে। বাবা-মায়ের মনে হয় এতেই আমার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হয়ে যাবে।

আমি পড়াশোনা করতে ভালবাসি আর আমি এখন সংসার করতে একটুও আগ্রহী নই। বাবা-মা আমার ভালই চান, কিন্তু আমি জানি যে কোনও ছেলের সাহায্য ছাড়াই আমি আমার ভবিষ্যৎ নিজেই গড়ে তুলতে পারব, আর এটা আমি বাবা-মাকে করে দেখিয়ে দেব।

একদিন রাতে আমি ওদের নীচে বসলাম এবং ৩টি কারণের মধ্য দিয়ে গিয়েছিলাম যে আমার জীবনে এখনই কোনো ছেলের প্রয়োজন নেই

“পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ দেওয়াটাই আমার ভবিষ্যতের চাবিকাঠি”। আমি বাবা-মাকে বলেছি যে আমার শিক্ষাই আমার ভবিষ্যৎকে সুনিশ্চিত করবে। আমি তাঁদেরকে দেখিয়েছি যে আমি পরীক্ষায় কত ভাল নম্বর পেয়েছি আর তাঁদেরকে এ-ও জানিয়েছি যে আমার শিক্ষক-শিক্ষিকারা আমাকে বুদ্ধিমান বলেই মনে করেন। এসব দেখে-শুনে বাবা খুব গর্ববোধ করলেন আর তাঁর মুখে হাসি ফুটেছিল।

“আমার অর্জিত অর্থ আর আমার পছন্দ”। শনি-রবিবারে আমি চাকরি করি, সেখান থেকে যা টাকা পাই তা দিয়ে আমার পড়াশোনার খরচ উঠে যায় আর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় কাজকর্মেও হাত পাকিয়ে নিচ্ছি। সোম থেকে শুক্র অবধি মন দিয়ে পড়াশোনা করে আর শনি-রবিবারে চাকরি করে কোনও ছেলের জন্য সময় বের করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করে রোজগার করছি বলে একজন ছেলের ওপর নির্ভরশীল হওয়ার বদলে আমি নিজেই নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগ পাচ্ছি।

“বলিষ্ঠ নারী চরিত্রের গুরুত্ব বেশি।” স্কুলের মাধ্যমে আমি স্থানীয় একটি পরামর্শদান কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছি। সেখানে স্নাতক উত্তীর্ণ মহিলারা কেরিয়ার গড়ে তোলার ব্যাপারে নানা রকম সাহায্য করেন যাতে আমরা নিজের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারি। আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তৈরির কাজে আমাকে সাহায্য করেন আমার মেন্টর বা পরামর্শদাতা ফারাহ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেন আর পাশাপাশি একটি ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানিতে চাকরিও করেন। আমি সেখানে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করি আর তিনি আমাকে অনেক কথা শেখান। আমি নিশ্চিত, তাঁর সাহায্য পেতে থাকলে আমি পর্যাপ্ত নম্বর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার পছন্দের বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করার জন্য ভর্তি হতে পারব।

আমি ধন্য যে আমার বাবা-মা আমার চাহিদাগুলো বুঝতে পেরেছেন। এখন তাঁরাই আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন যাতে আমি উঁচু ক্লাসের পড়াশোনা শেষ করতে পারি আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে তাঁদের মনে আনন্দ এনে দিতে পারব।

Share your feedback